১ম খণ্ড: ইমাম আবু হানিফা রাহি.
২য় খণ্ড: ইমাম মালিক রাহি.
৩য় খণ্ড: ইমাম শাফিয়ি রাহি.
৪র্থ খণ্ড: ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল রাহি.
৫ম খণ্ড: ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক রাহি.
৬ষ্ঠ খণ্ড: ইমাম হাসান আল-বাসরি রাহি.
২য় খণ্ড: ইমাম মালিক রাহি.
৩য় খণ্ড: ইমাম শাফিয়ি রাহি.
৪র্থ খণ্ড: ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল রাহি.
৫ম খণ্ড: ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক রাহি.
৬ষ্ঠ খণ্ড: ইমাম হাসান আল-বাসরি রাহি.
আব্দুল্লাহ ইবনু ওয়াকিদ রাহিমাহুল্লাহ বলেন, মৃত্যুর পর হাসান ইবনু উমারাহ রাহিমাহুল্লাহ ইমাম আবু হানিফাকে গোসল দিচ্ছিলেন। আমি তার শরীরে পানি ঢালছিলাম আর লক্ষ করছিলাম, অত্যধিক ইবাদত ও জালিমের পাশবিক অত্যাচারের ফলে তার দেহ একেবারে শীর্ণকায় হয়ে পড়েছে। গোসলের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর হাসান ইবনু উমারাহ রাহিমাহুল্লাহ তার বিশেষ গুণাবলির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন। তার বর্ণনা শুনে উপস্থিত সবাই সশব্দে কাঁদতে আরম্ভ করেন।
এরপর যখন তার খাটলি কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন মানুষের অশ্রুবৃষ্টিতে কবরের মাটি ভিজে একাকার হয়ে যায়। আমি সেদিনের মতো কাউকে এত বেশি কাঁদতে দেখিনি!
—বই : ইমাম আবু হানিফা রাহিমাহুল্লাহ
.
কা‘নাবি বলেন, ইমাম মালিকের অন্তিম মুহূর্তে তার কাছে গিয়ে দেখি, তিনি অনবরত কাঁদছেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আব্দুল্লাহর বাবা, আপনি কাঁদছেন কেন? তিনি উত্তর দিলেন, ইবনু কানাব, কেন কাঁদব না, বলো? কান্নাই তো এখন আমার ভাগ্যলিপি! আহ্, নিজের মতামতের আলোকে যেসব ফাতওয়া দিয়েছি, সেগুলোর জন্য যদি আমাকে একটি করে চাবুক মারা হতো এবং দুনিয়াতেই যদি এসবের শাস্তি চূড়ান্ত হয়ে যেত! আহ্, আমি যদি নিজের মতামতের আলোকে ফাতওয়া না দিতাম!
—বই : ইমাম মালিক রাহিমাহুল্লাহ
.
অসুস্থতার কারণে তিনি অবর্ণনীয় কষ্ট ভোগ করেন। রক্তক্ষরণের কারণে শারীরিকভাবে ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়েন। তবে আশ্চর্যের বিষয়, এই অসুস্থতা নিয়েই তিনি দীর্ঘ চার বছর মিশরে অবস্থান করেন। দিনরাত ফিকহি গবেষণা চালিয়ে যান। দারস-তাদরিসে সময় পার করেন। ফিকহি আলোচনায় অংশ নেন এবং গবেষণামূলক অধ্যয়ন অব্যাহত রাখেন। শুধু তা-ই নয়; মিশরে অবস্থানকালীন এই গবেষণা ছিল পূর্বের গবেষণা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং মানে ও পরিমাণে অতুলনীয়। তার এই সাধনা ও অধ্যবসায় দেখে মনে হয়, অধ্যয়ন ও ইলমি গবেষণাই ছিল তার রোগের একমাত্র প্রতিষেধক।
—বই : ইমাম শাফিয়ি রাহিমাহুল্লাহ
.
ইমাম আহমাদের পুত্র সালিহ বলেন, ‘মুমূর্ষু অবস্থায়ও আমার পিতা দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতেন। আমি তাকে ধরে রাখতাম। রুকু-সিজদায় নিয়ে যেতাম। কিয়াম করাতাম। একদিন মুজাহিদ ইবনু মুসা তাকে দেখতে এসে বলেন, আবু আব্দিল্লাহ, আপনার জন্য সুসংবাদ! বিপুলসংখ্যক মানুষ আপনার পক্ষে সাক্ষ্য দিচ্ছে। আপনি যদি এই মুহূর্তেই আল্লাহর সামনে হাজির হন, তবু কোনো সমস্যা নেই। এমন অভয়বাণী শুনে তিনি তার হাতে চুমু খান এবং অঝোরে কাঁদতে থাকেন।
—বই : ইমাম আহমাদ রাহিমাহুল্লাহ
.
হুমাইদ আত তবিল বলেন, হাসান আল-বাসরি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মারা যান। জুমআহ বার সকালে আমরা তার গোসলকার্য সম্পন্ন করি। জুমআহ’র সালাতের পর তাকে দাফনের উদ্দেশ্যে কবরস্থানে নিয়ে যাই। স্থানীয়দের সবাই আমাদের অনুসরণ করে। হাসান আল-বাসরির শোক ও প্রশংসায় তাদের চোখ ও জিহ্বা সিক্ত হয়ে ওঠে। তার জানাযায় মানুষের উপস্থিতি এতটাই ব্যাপক ছিল যে, সেদিন বাসরার জামে মসজিদে আসরের সালাত পড়ানো হয়নি। কারণ, মহল্লার সকলেই তার জানাযায় চলে গিয়েছিল। মসজিদে আসরের সালাত পড়ার মতো একজন মুসল্লিও ছিল না। আমার জানামতে, ইসলামের ইতিহাসে এমন ঘটনা আর কখনো ঘটেনি।
—বই : হাসান আল-বাসরি রাহিমাহুল্লাহ
আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক রাহিমাহুল্লাহ যখন মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে, তখন তার ক্রীতদাস নাসরকে বলেন, ‘আমার মাথাটা মাটিতে রাখো।’ এতে নাসর কাঁদতে শুরু করে। ইবনুল মুবারক জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি কাঁদছ কেন?’ সে উত্তরে বলে, ‘সাইয়িদি, আপনার ধনসম্পদ ও প্রভাব-প্রতিপত্তির কথা মনে পড়ছে। আপনি চাইলে আজীবন ভোগবিলাসে ডুবে থাকতে পারতেন। কিন্তু কখনোই তা করেননি। আজ সব ছেড়ে নিঃস্ব অবস্থায় এই জনশূন্য মরুভূমিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করছেন’—এই বলে সে আবারও ডুকরে কেঁদে ওঠে। ইবনুল মুবারক তাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘রবের কাছে এমনটাই তো প্রার্থনা করতাম আমি—যেন ধনী হয়ে জীবনযাপন করি, আর নিঃস্ব হয়ে মৃত্যুবরণ করি। যাহোক, আমাকে শাহাদাহ পাঠ করাও, আমি নিজ থেকে কথা না বলা পর্যন্ত আর কোনো কথা বলবে না।
—বই : আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক রাহিমাহুল্লাহ
Reviews
There are no reviews yet.